বন্টন দলিল ও বাটোয়ারা মামলা

ন্টন দলিল কি?

১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প এক্টের ২ (১৫) ধারায় বলা হয়েছে বণ্টন দলিল ও বণ্টক দলিল অর্থ একই ৷ যখন কোন সম্পত্তির সহ-শরিকগণ তাদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানায় পৃথকভাবে ভাগ করে নেয় বা নিতে সম্মত হয়ে কোন দলিল করে তাকেই বণ্টন দলিল বলে ৷
 
বণ্টন সম্পন্ন হওয়ার শর্ত:
→সীমানা চিহ্নিতকরণ বা পরিমাপ দ্বারা সম্পত্তির প্রকৃত বিভাজন হতে হবে;
→বন্টন তালিকায় প্রত্যেক সহ-মালিকের বরাদ্দকৃত সম্পত্তির উল্লেখ থাকতে হবে;
→তালিকায় মালিকানার বিভাজন সকল সহ-মালিক কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে;
→বন্টনের বিবরণ সুস্পষ্ট হতে হবে;
→প্রত্যেকটি তালিকা সহ-মালিকবৃন্দ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে;
→যথাযথভাবে স্ট্যাম্প শুল্ক দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে হবে;
→সহ-শরীকগণ আপোষ বন্টন করে পরবর্তীতে তাদের কেউ তা না মানলে দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে তা কার্যকর করা যায় ৷
 
বন্টননামা রেজিষ্ট্রির ফি:
সকল সহ-শরিকের মধ্যে জমি হিস্যানুযায়ী (স্ট্যাম্প এর উপর) বন্টন করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করে বন্টননামা দলিল রেজিষ্ট্রি করা যায় ৷ এ দলিল রেজিস্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প খরচ লাগবে
→স্ট্যাম্প এর গায়ে জমির যে মূল্য রেখা হবে তার ২% হারে ৷ এছাড়া অন্যান্য ফিস কবলা দলিল রেজিস্ট্রিতে যেমন লাগে অনুরূপ লাগবে ৷
বাটোয়ারা মামলা করার জন্য যা প্রয়োজন:
→দেওয়ানী আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেও নিজেদের সহায়-সম্পত্তি বন্টন করে নেয়া যায় ৷ এ জন্য যা প্রয়োজন হবে তা হলোঃ
→আবেদনের গায়ে ১০০/- টাকার কোর্ট ফি ৷
→ছাহাম চাইলে প্রতি ছাহামের জন্য ১০০/- টাকা ফি ৷
→মালিকানার সূত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ৷
→সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে হলে বংশানুক্রম 
 
বাটোয়ারা মামলায় সাধারণত প্রত্যেক দাগের জমি সকল সহ-শরীক এর মধ্যে বণ্টিত হয়ে থাকে ৷ এ মামলায় ২ বার ২টি ডিক্রী হয় ৷
 
প্রাথমিক ডিক্রী:
এ ডিক্রীতে হিস্যানুযায়ী বন্টন আদেশ দেয়া হয় ৷
 
 
চূড়ান্ত ডিক্রী:
এ ডিক্রীতে প্রয়োজনে আমিন কমিশন পাঠিয়ে সরে জমিনে সম্পত্তির দখল দেয়া হয় এবং সীমানা পীলার দ্বারা বিভাজন (জমির ভাগ) চিহ্নিত করার মাধ্যমে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রচার করা হয় ৷ আদালত প্রয়োজনে আইন শৃংখলা বাহিনী নিয়োগ করে সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে ডিক্রী প্রাপককে সম্পত্তির দখল দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন ৷
 
আপনার বাবার মৃত্যুর পর যদি আপনার চাচা জমি বণ্টন করে না দেন, তাহলে আপনাকে আদালতে একটি বণ্টন মামলা দায়ের করতে হবে। এর জন্য নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
 
1. আইনজীবীর পরামর্শ নিন: 
একজন ভালো আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করুন যিনি জমি বণ্টন সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করতে অভিজ্ঞ।
 
2. দলিলপত্র সংগ্রহ করুন: 
জমির সমস্ত দলিল, মৃত্যু সনদ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন।
 
3. নোটিশ প্রেরণ: 
প্রথমে আপনার চাচাকে আইনি নোটিশ প্রেরণ করুন, যেখানে আপনি জমির আপনার অংশ দাবি করবেন।
 
4. মামলা দায়ের:  
যদি নোটিশ প্রেরণের পরও সমাধান না আসে, তাহলে আপনাকে আদালতে বণ্টন মামলা দায়ের করতে হবে।
 
5. আদালতের প্রক্রিয়া:  
 আদালতে জমি বণ্টনের প্রমাণ এবং তথ্যাদি উপস্থাপন করুন।
 
**মামলা করতে কত খরচ হতে পারে**:
মামলা দায়েরের খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর, যেমন জমির মূল্য, আইনজীবীর ফি, কোর্ট ফি ইত্যাদি। সাধারণত বণ্টন মামলার খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে। আপনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করতে পারেন:
 
>> আইনজীবীর ফি- ডিমান্ড অনুযায়ী।
>> কোর্ট ফি- জমির মূল্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
>>অতিরিক্ত খরচ- দলিলপত্র সংগ্রহের খরচ, নোটিশ প্রেরণের খরচ, প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট ইত্যাদির খরচ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন