কুমিল্লায় ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চর্মরোগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ৭০% স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, দেবীদ্বার, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও রেইসকোর্স এলাকায় রোগটির প্রকোপ বেশি।
স্ক্যাবিসের প্রধান উপসর্গ হলো শরীরের বিভিন্ন স্থানে তীব্র চুলকানি ও লাল দানা বা ফুসকুড়ি ওঠা। বিশেষ করে দুই আঙুলের ফাঁক, কোমর, ঘাড়, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ, হাতের তালু, কব্জি, বগলের নিচে, নাভি ও কনুইয়ে এই রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। চুলকানির ফলে ক্ষত হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে অন্য সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা জানান, স্ক্যাবিস একটি পরজীবীজনিত চর্মরোগ, যা সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই নামক পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেওয়া হয়, তবে কিডনি জটিলতার মতো মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।
স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ, যা আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শ বা তার ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর ও তোয়ালে থেকেও ছড়াতে পারে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। চিকিৎসায় এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। একই ঘরে অবস্থানকারী সব সদস্যদের একসঙ্গে চিকিৎসা নেওয়া পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গরম-শীত, গরমের বৃষ্টি এ রোগের মৌসুম। আবার এটি যৌনবাহিতও। চিকিৎসায় নিরাময়যোগ্য স্ক্যাবিসে সংক্রামিত ব্যক্তি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে জীবাণু ছড়িয়ে আক্রান্ত হতে পারেন পুরো পরিবার। স্ক্যাবিস কিডনিকে আক্রান্ত করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শের সঙ্গে জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।
স্ক্যাবিসের প্রতিরোধে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, তোয়ালে, বিছানাপত্র গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত। নিয়মিত গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাও গুরুত্বপূর্ণ।
কুমিল্লা জেলায় স্ক্যাবিসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্কতা জারি করেছে। তারা জনগণকে সচেতন করে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন