বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশ এক অদ্ভুত রাজনৈতিক বাস্তবতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে গণতন্ত্রের মোড়কে ‘গুপ্ত স্বৈরাচার’ আবির্ভাবের লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে। লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল বার্তায় দেওয়া এক রাজনৈতিক বিশ্লেষণে তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের আচরণে প্রকাশ্য স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে অদৃশ্য কর্তৃত্ববাদী শাসন।
তারেক রহমান বলেন, “আজকে বাংলাদেশে ভোটের প্রয়োজন নেই, জনগণের মতামতের গুরুত্ব নেই—সব সিদ্ধান্ত হয় প্রশাসনিক ক্ষমতার দাপটে। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে এসে ভয়ভীতি ও দমননীতির মাধ্যমে একটি অবদমিত সমাজ তৈরি করা হচ্ছে। এটি প্রকাশ্য স্বৈরতন্ত্র নয়—এটি গুপ্ত স্বৈরাচার।”
![]() |
| বাংলাদেশে নীরব স্বৈরশাসন গড়ে উঠছে’ — তারেক রহমানের বিস্ফোরক মন্তব্য |
তিনি অভিযোগ করেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। অনেক গণমাধ্যম বাধ্য হচ্ছে আত্মনিয়ন্ত্রণে। অনেকে আবার ভয়ের কারণে সত্য প্রকাশে বিরত থাকছে। “যখন সাংবাদিক সত্য বললেই মামলা খেতে হয়, যখন ভিন্নমত প্রকাশ করলেই রাষ্ট্রদ্রোহের তকমা লাগানো হয়—তখন বুঝতে হবে দেশে গণতন্ত্র কেবল বাক্যবন্দী,” যোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান আরও দাবি করেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর ক্রমাগত দমনপীড়ন চালানো, গণসমাবেশে বাধা প্রদান, প্রশাসনিকভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া—এসবই সুসংগঠিত একক ক্ষমতা নিশ্চিত করার কৌশল। তিনি বলেন, “যে রাষ্ট্রে জনগণ নয়, বরং কিছু ব্যক্তিই সিদ্ধান্ত দেয়—সেই রাষ্ট্রে গণতন্ত্র থাকে না; থাকে কর্তৃত্ববাদ।”
তবে তিনি আশাবাদও ব্যক্ত করেন। তারেক রহমান মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব। অতীতে যেমন স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা রুখে দাঁড়িয়েছে, তেমনিভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতেও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে।
তিনি দেশের জনগণের উদ্দেশে বলেন, “পরিবর্তন কখনো একদিনে আসে না। পরিবর্তন আসে সচেতনতা ও সম্মিলিত শক্তির মাধ্যমে। তাই দল-মত নির্বিশেষে সব গণতন্ত্রমনা মানুষকে এক হতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তারেক রহমানের এই বক্তব্য চলমান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি করতে পারে। কেউ কেউ এটিকে ভবিষ্যৎ আন্দোলনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন, আবার সরকারের ঘনিষ্ঠ মহল এটিকে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার বলে অবজ্ঞা করতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন