Top News

"অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান: সার্ক পুনরুজ্জীবন ও পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত আঞ্চলিক নিরাপত্তা"

 অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের দুর্বল হয়ে যাওয়া অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলোকে নতুনভাবে সক্রিয় করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

সেটি ছাড়াও, অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ককে পুনরায় সক্রিয় করার গুরুত্বও তুলে ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ বিষয়গুলো প্রকাশ করেন।

"অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান: সার্ক পুনরুজ্জীবন ও পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত আঞ্চলিক নিরাপত্তা"

ভাষণে তিনি বলেন, “প্রতিটি দেশের পারমাণবিক শক্তি শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করার অধিকার রয়েছে এবং আমরা সেই অধিকারকে সমর্থন করি।” তিনি আরও যোগ করেন, “এ বছর আমরা শুধু মিয়ানমারে নয়, বিশ্বব্যাপী—ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ছবি প্রত্যক্ষ করেছি। তাই পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও নিরস্ত্রীকরণের গুরুত্ব আমরা আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।”

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, “একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে, আমাদের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার অধীনে পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যৌথ কনভেনশনে যোগদান করেছি। এটি আমাদের পারমাণবিক নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।” তিনি আরও বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার প্রতিরোধ ও নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “চার দশক আগে গঠিত সার্ক প্রাথমিক পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছিল এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার শক্ত ভিত্তি স্থাপন করেছিল। যদিও রাজনৈতিক জটিলতার কারণে কার্যক্রম কিছুটা স্থবির হয়েছে, সংস্থাটির কাঠামো এখনও কার্যকর এবং কোটি কোটি মানুষের কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম।”

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতায় পারস্পরিক শ্রদ্ধা, স্বচ্ছতা ও কল্যাণের মূলনীতি মানে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিমসটেক, বিবিআইএন, এশিয়ান হাইওয়ে ও সার্কের মতো আঞ্চলিক উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে এবং আসিয়ানের মতো কার্যকর আঞ্চলিক ফোরামে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া সম্মিলিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। অভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের ন্যায্য ব্যবহার ও সহমর্মিতার ভিত্তিতে সহযোগিতা অপরিহার্য।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “প্রাকৃতিক সম্পদের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সম্প্রতি আমরা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে জাতিসংঘের পানিসংক্রান্ত কনভেনশনে যোগ দিয়েছি।”

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন